তারিখ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁ-৬ আসনে নির্বাচনী সহিংসতা

নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের জেরে
নওগাঁ-৬ আসনে নির্বাচনী সহিংসতায় নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৬জন কর্মী-সমর্থক আহত
[ভালুকা ডট কম : ২৬ ডিসেম্বর]
নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুরের জেরে সোমবার সন্ধ্যায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতিকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় মারপিটে উভয় পক্ষের ৬জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপর ২জন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছে এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরে গেছে।

আহতরা হলেন রাণীনগর উপজেলা আ’লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০) ও তার ভাই মাহাবুর হোসেন সুমন (৪৬), রাণীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক (৩১), রবিউল ইসলাম (৩৩), আ’লীগনেতা ফারুক হোসেন (৪৫), কাশিমপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মন্ডল (৪৭)। এছাড়া নৌকার সমর্থক-কর্মী রাজ (৩৯) ও বাদল হোসেন (৩৫) নামের অপর দুইজনও আহত হয়েছে। বর্তমানে বাদল হোসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছে।

কাশিমপুর গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে আহত বাদল হোসেন জানান আমি ঘটনাস্থলে এসে দাঁড়ানোর কিছু সময় পর স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন ২৫-৩০ মোটরসাইকেলে ৫০-৬০জন তার লোকজনসহ এসে নেমেই আমার নাম ধরে সুমন নিজে আমাকে এলোপাতাড়ী ভাবে মারপিট শুরু করে। এসময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। আমার শরীর থেকে সকল কাপড় ছিড়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। এরপর স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এমন সন্ত্রাসী প্রার্থী ও তার লোকজনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের উপযুক্ত আইনগত শাস্তি দাবী করছি।

রাণীনগর উপজেলা আ’লীগের সদস্য ও এমপি হেলালের ছেলে রাহিদ সরদার বলেন শুরু থেকেই আমরা নৌকার পক্ষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছি। কিন্তু রবিবার রাতের কোন এক সময় আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের হাতিয়াপাড়া গ্রামে নৌকার নির্বাচনী অফিসে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনেরা হামলা করে নির্বাচনী অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাংচুর ও পোস্টার ব্যানার ছিড়ে ফেলে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চারাপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় উভয় পক্ষের কথাকাটির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন নৌকার সমর্থক বাদল হোসেন নামের এক কর্মীকে আঘাত করে। ফলে ওখানে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটলে কয়েকজন আহত হয়। অপরদিকে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আনোয়ার হোসেন নৌকা সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে উস্কানিমূলক কথা বললে সেখানে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন রাজ ইসলাম নামের নৌকা সমর্থককে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে মারপিটের সৃষ্টি হয়।

তিনি আরো বলেন দিন যতই যাচ্ছে ততই স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার লোকজনেরা নির্বাচনের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা করছে এবং শান্তিনগরীর ভাবমূর্তি নষ্ট করছে যা কোন পক্ষের জন্যই মঙ্গলজনক নয়। সুমনের লোকজন আমাদের লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান এবং বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথা বলা অব্যাহত রেখেছে। মানুষের  মুখে মুখে নৌকার পক্ষে গড়ে ওঠা গণজোয়ারকে প্রতিহত করতে এমন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকে সুমন ও তার দোসররা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা যদি এমন জঘন্যতম কাজ থেকে বিরত না হয় তাহলে আমরাও নৌকার সম্মান রক্ষার্থে কঠোর ভাবে এমন অন্যায় কর্মকান্ডকে দলীয় শক্তি দিয়ে প্রতিহত করবো ইনশাল্লাহ।

আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক নাদিম হোসেন মুঠোফোনে জানান সোমবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের লোক আজাহার বাউল নামের এক ব্যক্তি তাকে নৌকার পক্ষে কাজ না করার হুমকি-ধামকী প্রদান করে। নৌকার পক্ষে কাজ করলে তাকে কেটে টুকরো টুকরো করার হুমকি প্রদান করে ওই আজাহার বাউল। এমন ভাবে সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা নৌকার লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে বলে জানান চেয়ারম্যান নাদিম।  

স্বতন্ত্র প্রার্থী এ্যাড. ওমর ফারুক সুমন জানান নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার লোকেরা তার প্রচারনার কাজে বাধার সৃষ্টি করে আসছে। তার লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বিকালে তার স্ত্রী নির্বাচনী প্রচারনার কাজে উপজেলার কাশিমপুর চারাপাড়া এলাকায় গেলে নৌকা প্রার্থীর লোকজনরা বাধা দিয়ে আটকে রাখে। আমি সেখানে গিয়ে স্ত্রীসহ অন্যদের উদ্ধার করার সময় নৌকার লোকেরা তাদের উপর হামলা করে। ফলে তার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হলে তাদের হাপাতালে নিয়ে এলে সেখানে আবারো নৌকার লোকজনেরা হামলা করে। এতে করে গুরুত্বর আহত দুইজনকে জেলা সদর ও অপরদুইজনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ জানান কামিশপুর ঘটনাস্থলে আমার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলো। সুমন যখন তার ৫০-৬০জন লোক নিয়ে কাশিমপুরে পৌছে তখনই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায। এতোগুলো মানুষকে মাত্র কয়েকজন পুলিশ সদস্য দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তবুও আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিবেশ শান্ত করি। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত ভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি সকল প্রার্থী ও তাদের সমর্থকসহ সকল মানুষকেই আন্তরিক হওয়ার অনুরোধ করছি। তবেই এই আসনে একটি সুষ্ঠ, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

নির্বাচন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই