বিস্তারিত বিষয়
মহাদেবপুর হাটে খাস আদায়ের নামে চলেছে হরিলুট
নওগাঁর মহাদেবপুর হাটে খাস আদায়ের নামে চলেছে হরিলুট ॥ দ্বিগুনের চেয়ে বেশি খাজনা আদায়ের অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ০৩ জুলাই]
নওগাঁর মহাদেবপুর হাটে খাস আদায়ে (খাজনা আদায়) ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এমদাদুল হক ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার ফিরোজ আহম্মেদ এর বিরুদ্ধে। যেখানে সরকারি টোল (খাজনা) আদায়ের বাহিরে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে। আবার হাট থেকে আদায়কৃত খাজনা সরকারি কোষাগারে সঠিকভাবে জমা দেয়া হয় কিনা তা নিয়েও গুঞ্জন চলছে। এতে সরকার লাখ টাকা রাজস্ব পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টির উপর নজরদারী বাড়ানোর অনুরোধ করছেন সচেতনরা।
জানা গেছে, চলতি ১৪২৭বঙ্গাব্দে মহাদেবপুর হাট ইজারা হয়নি। এতে সরকারিভাবে খাস আদায় (খাজনা আদায়) করা হচ্ছে। সপ্তাহে দুইদিন শনিবার ও বুধবার হাট বসে। তবে শুধুমাত্র শনিবার গরু ও ছাগল বেঁচাকেনা হয়ে থাকে। সরকারিভাবে যেখানে খাজনা আদায় নির্ধারণ করা আছে প্রতিটি গরু ৪০০ টাকা এবং ছাগল ১৫০ টাকা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার হাটে প্রতিটি গরু ৫০০-৫২০ টাকা এবং প্রতিটি ছাগল শতকরা ১০ টাকা করে খাজনা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া লিখনিতে গরুতে ২০ টাকা এবং ছাগলে ১০ টাকা করে নেয়া হয়। হাটে প্রতিটি গরুতে ৫০০ টাকা খাজনা আদায় করা হলেও রশিদে ৪০০টাকা এবং প্রতিটি ছাগলে ২০০টাকা থেকে তারও বেশি টাকা খাজনা আদায় করা হলেও রশিদে ১৫০ টাকা লিখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
প্রতি হাটে প্রায় ১০ হাজার মণ ধান, দেড়শ থেকে দুইশ মণ আলু বেঁচাকেনা হয়ে থাকে। ধান বিক্রেতার কাছ থেকে ৫ টাকা মণ ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৪ টাকা মণ এবং আলু ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ১০ টাকা মণ হিসেবে খাজনা নেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া অন্যান্য থেকেও খাজনা আদায় করা হয়। যেখানে হাট থেকে প্রায় লাখ টাকা খাজনা আদায় হয়ে থাকে।
ধানের আড়তের শ্রমিক সালাউদ্দিন বলেন, প্রতি হাটে প্রায় ১০হাজার মণ ধান বেঁচাকেনা হয়ে থাকে। যেখানে কৃষকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীররা প্রতি মণে ৫টাকা খাজনা কেটে নেয়। এছাড়া ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তায় (দুই মণ) ৮ টাকা খাজনা দিয়ে থাকে। কাঁচা তরকারির ব্যবসায়ী হবিবর বলেন, সপ্তাহে দু’দিন হাট বসে। প্রতি হাটে ২০ টাকা করে তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করা হয়। তার মতো প্রায় ১০০ জনের কাছ থেকে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়।
উপজেলার খাঁজুর গ্রামের ছাগল ক্রেতা বাবু বলেন, হাটে ৩হাজার ৮শ টাকা দিয়ে ছাগল কিনে ২০০ টাকা খাজনা দিতে হয়েছে। কিন্তু রশিদে ১৫০ টাকা লিখা হয়। এছাড়া বেলকুড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলাম দুইটি ছাগলে ৪০০ টাকা এবং মান্দা থানার দূর্গাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের দুইটি ছাগল ৩৫০ টাকা খাঁজনা দিতে হয়েছে।
উপজেলার বাগডোব গ্রামের ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে গত ২০ জুন তারিখে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে ছাগল কিনে ২৫০ টাকা এবং তুড়–ক গ্রাম গ্রামের গরু ক্রেতা রিয়াজ উদ্দিনের কাছ থেকে ২২ হাজার ৮০০ টাকায় গরু কিনে ৫০০ টাকা খাঁজনা দিতে হতে হয়েছে। ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সহকারী তহশিলদার ফিরোজ আহম্মেদ এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চান না। বিষয়টি ইউএনও স্যার ভাল জানেন বলে জানান তিনি।
মহাদেবপুর উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার এবং খাস আদায়কারী মো: এমদাদুল হক বলেন, আমরা সরকারি কর্মচারী হওয়ায় কখনো এমন দায়িত্ব পালন করা হয়নি। গত ২০ জুন হাটে খাজনা আদায়ে কিছুটা অসঙ্গতি হওয়ায় পরে তা বন্ধ করা হয়। তবে ২৭ জুন এক টাকাও বেশি নেয়া হয়নি। এছাড়া খাজনা আদায়ে কোন অনিয়ম করা হয়নি। যত পারেন লিখেন।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত ২০ জুন হাটে একটু সমস্যা হয়েছিল। এরপর থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে গত ২৭ জুন হাটে সরকারি মূল্যের বাহিরে কোন খাজনা আদায় হয়নি। এছাড়া রশিদের বাহিরে কেউ যদি বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে এমন কোন লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে হাটে কত টাকা আদায় হয়েছে তা অন্য কাউকে দেয়ার বিধান নাই বলে জানান তিনি।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- যশোরে চলছে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক [ প্রকাশকাল : ০১ মার্চ ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- গ্রামীণ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক্টর [ প্রকাশকাল : ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- শার্শায় বালু উত্তলনে পরিবেশ হুমকির মুখে [ প্রকাশকাল : ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২.৩৫ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরের আবাদপুকুর হাটের জরাজীর্ণ অবস্থা [ প্রকাশকাল : ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১০.৩০ পুর্বাহ্ন]
- জনবল সংকটে তজুমদ্দিনে বেহাল প্রাথমিক শিক্ষা [ প্রকাশকাল : ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে আবাসিক মাস্টারপাড়া [ প্রকাশকাল : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- রায়গঞ্জ পৌরসভায় নির্মিত ড্রেন বেড়েছে দুর্ভোগ [ প্রকাশকাল : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ [ প্রকাশকাল : ২২ আগস্ট ২০২৩ ০২.২৫ অপরাহ্ন]
- ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ এমটিএফই [ প্রকাশকাল : ২১ আগস্ট ২০২৩ ০১.৪০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষি উপকরণ বিতরণে অনিয়ম [ প্রকাশকাল : ১২ আগস্ট ২০২৩ ০২.০০ পুর্বাহ্ন]
- তজুমদ্দিন হাসপাতালে নেই জলাতঙ্ক ও করোনার টিকা [ প্রকাশকাল : ২৪ জুলাই ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নান্দাইলে অবৈধ কারখানায় হুমকিতে জনজীবন [ প্রকাশকাল : ০৭ জুলাই ২০২৩ ১১.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে শিক্ষক যখন চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীরা [ প্রকাশকাল : ০৪ জুলাই ২০২৩ ০১.০৫ অপরাহ্ন]
- অস্তিত্ব সংকটে রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা বন্দর [ প্রকাশকাল : ০৩ জুলাই ২০২৩ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- উন্নয়নের ছোঁয়া স্পর্শ করেনি রাণীনগরের হাট [ প্রকাশকাল : ৩১ মে ২০২৩ ০১.১৩ অপরাহ্ন]