তারিখ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গফরগাঁও পৌর মেয়র-এসএম ইকবাল হোসেন সুমন

পৌরসভাকে আধুনিক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি
গফরগাঁও পৌর মেয়র-এসএম ইকবাল হোসেন সুমন
[ভালুকা ডট কম : ২৯ অক্টোবর]
আওয়ামীলীগের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত ময়মনসিংহ জেলার সর্বদক্ষিণে অবস্থিত গফরগাঁও পৌরসভা।এ পৌরসভাটির যাত্রা শুরু ১৯৯৯ সালের ২০জুলাই। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌর ভবনটি ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত। ৫দশমিক ৩৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভাটির বর্তমান জনসংখ্যা ৩৯ হাজার ৯৭৩ জন।মোট ভোটার সংখ্যা ২০৮৪০।তার মধ্যে পুরুষ-১০২৩০,মহিলা-১০৬১০ জন।শুরুতে ‘গ’শ্রেণী দিয়ে পৌরসভা যাত্রা শুরু।এরপর ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল ‘গ’শ্রেণী থেকে ‘খ’ শ্রেণীতে উন্নীত হয় গফরগাঁও পৌরসভাটি।পরবর্তীতে ২০১২ সালের ৭ফের্রুয়ারি পৌরসভাটি ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’শ্রেণীতে অথাৎ প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হয়।যাত্রা শুরু থেকেই দলীয় প্রতিকে নির্বাচন না হলেও এপৌরসভাটি আওয়ামীলীগ সমর্থিত মেয়রদের দখলে রয়েছেন।

গফরগাঁও পৌরসভার তৃতীয়বারের মতো মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি এসএম ইকবাল হোসেন সুমন।২০১৫ সালের ৩০ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।প্রায়াত আলতাফ হোসেন গোলন্দাজের ছেলে তরুন সংসদ সদস্য ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেলের হাত ধরে রাজনীতিতে আগমন মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমনের।এর আগে তিনি ছিলেন একজন সফল চামড়া শিল্প ব্যবসায়ী।মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর বিগত সাড়ে তিন বছরে তিনি বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন।৪কেটি ৫৩লাখ ৪৬ হাজার ৭৫১ টাকা ব্যায়ে পৌরসভার আধুনিক নতুন পৌর ভবন নির্মাণ কাজ।প্রতিটি ওয়ার্ডে রাস্তা পাকা করণ,ড্রেন,কালভার্ট স্থাপন। পৌর এলাকার রাস্তা গুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতি,বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবারহের জন্য শহরের শুরুত্বপূর্ণ স্থানে টিউবওয়লে স্থাপন এবং রাস্তা সম্প্রসারণসহ অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তারপরও রয়ে গেছে পৌরবাসীর অনেক সমস্যা।পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণী পৌরসভা হলেও তুলনামূলক ভাবে বাড়েনি নাগরিক সুযোগ সুবিধা।পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক।পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবন্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা।যত্রতত্র নছিমন,টমটম.ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের উৎপাতে অতিষ্ট পৌরবাসী।এসব যানবাহনের জন্য নেই কোন নির্ধারিত জায়গা।ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে দোকানপাট।বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পৌর ট্যাক্স বৃদ্ধি এবং বর্জ ব্যবস্থাপনা ত্রুুটিসহ নানা সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছেন।

পৌরবাসী পৌরবাসিন্দা গফরগাঁও বাজারের বিশিষ্ট্য হোমিও চিকিৎসক ও উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডাঃ কেএম এহছান এডভোকেট বলেন,পৌর শহরের বাজারটি ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে একটি প্রচীনতম বাজার।অথচ এই বাজারের নিয়মিত নৈশ পাহারার কোন ব্যবস্থা নেই।ব্যবসায়ীবৃন্দ বহু চেষ্টা করেও বাজারে নৈশ পাহারাদার বিষয়ে সফল হতে পারেনি।নিয়মিত নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা না থাকায় কারণে শহরে রাস্তা,দোকানপাট ও বাসা বাড়িতে চুরি ও ছিনতাই বেড়েছে।পৌরবাসির ও ব্যবসায়ীদের জানমাল নিরাপত্তার স্বার্থে বাজারের এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত নৈশ পাহারাদার ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তিনি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

ডাঃ কেএম এহছান এডভোকেট আরে বলেন,অল্প দিনেই রাস্তা বেহাল দশার মুল কারণ হচ্ছে সংস্কারকৃত রাস্তার পাশ দিয়ে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা নেই।ফলে কাজ শেষ হতে না হতেই রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে অল্প দিনেই নষ্ট হয়ে যায়।পানি নিস্কাশনের জন্য প্রতি রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।এছাড়াও উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা যাতে বিপদগামী না হয়,তাদের দৃষ্টি ভঙ্গি এড়াতে শহরের সাংস্কৃতিক মনোনিবেশ গড়ে তোলার জন্য পৌরকর্তৃপক্ষের কাছে তিনি দাবি জানান।

পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ৭নং ওয়ার্ড বাসিন্দা আব্দুল হালিম মানিক বলেন,শহরের যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে রাস্তার পাশে ফুটপাত দখল।শহরের ব্যস্ততম রাস্তা গুলো ওয়েলডিং এবং হোটেল রেস্তোরার মালিকগণ মালামাল সামগ্রী রেখে দখল করে রেখেছেন।অবৈধ ভাবে রাস্তা দখল করে রাখার কারণে শহরে প্রতিনিয়ত যাজটের সৃষ্টি হচ্ছে।বিশেষ করে পৌর এলাকার ব্যস্ততম রাস্তা রেলওয়ে স্টেশনের রিক্সা মহল,শাহ্ মিসকিন রোর্ড(বুদিয়া মার্কেট রোর্ড),জামতলী মোড়,পাটমহাল মোড় ও শহীদ জব্বার চত্বর(চাঁদনী মোড়)যানজট এখন নিত্যদিনের।তাই এসব স্থানে নিয়মিত ট্রাফিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শহরকে যানজট মুক্ত রাখার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন)গফরগাঁও উপজেলা শাখা সভাপতি আব্দুর রহমান ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বাসিন্দা,নূর আবেদীন বাবুল বলেন,আগের তুলনায় সেবার মান বেড়েছে।কর্মচারীরা বাসায় এসে ট্যাক্স রশিদ দিয়ে যাচ্ছেন।এতে বাসা বাড়ির মালিকগণ সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের পৌর ট্যাক্স জমা দিতে পারছেন।নাগরিকদের আয় ব্যায় এবং সেবার মান বিবেচনা করে পৌর ট্যাক্স নির্ধারণের জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে দবি জানান।

পৌরবাসীর এসব সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন,পৌরবাসীর কিছু কিছু সমস্যা আছে।সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য নিরলস  ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।তিনি বলেন,নির্বাচনের আগে পৌরবাসীকে দেয়া আমার প্রতিশ্রুতির প্রায় অধিকাংশই কাজ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।যে টুকু বাকী আছে তা পূরনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।পৌরবাসীর যে সব সমস্যা আছে আসা রাখছি আগামী নির্বাচনের আগেই সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি বলেন,সংসদ সদস্য ফাহ্মী গোলন্দাজ বাবেলের দিক নির্দেশনায় গফরগাঁও পৌরসভাকে আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলার লাক্ষ্যে উন্নয়নের মাষ্টারপ্ল্যান তৈরী করা হয়েছে।ইতোমধ্যে শহর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে আওতায় প্রায় পৌনে দশ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করণ করা হয়েছে।পৌরবাসির চলাচলের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা এবং সিসি রাস্তা নিমার্ণ করা হয়েছে।২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসূচীর আওতায় ৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যায়ে ৬২টি প্যাকেজের কাজ এখনও চলমান রয়েছে।৩কোটি ৬লাখ টাকা ব্যায়ে ই-জিপি টেন্ডার চলমান রয়েছে।৭৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যায়ে পানি সরবারহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রণমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ ও পাম্প হাউজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমন আরো বালেন,জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আওতাধীন পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবারহ ও মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ এনভায়রণমেন্টাল স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ১৬লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে।এছাড়াও পৌরসভার নিজস্ব তত্বাবধানে ৯১ লাখ টাকা ব্যায়ে ৫টি পাবলিক টয়েলেট,১৫টি কমিউনিটি লেট্্িরন ও ১৯টি ডাস্টবিনের কাজ চলমান রয়ছে।৪কেটি ৫৩লাখ ৪৬ হাজার ৭৫১ টাকা ব্যায়ে আধুনিক নতুন পৌর ভবন নির্মাণ কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

মেয়র এসএম ইকবাল হোসেন সুমন বলেন,আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর বাজার ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন এনেছি।ফুটপাট উচ্ছেদ করে শহরকে যানজটমুক্ত রাখার জন্য একাধিক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি।বাল্য বিয়ে,ইভটেজিং,সন্ত্রাস,চাঁদাবাজি ও মাদক বিস্তার রোধে প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরগণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে  এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন।পৌরসভার উদ্যোগে ডেঙ্গু বিরোধী অভিযান চলছে।এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসসহ শহর এবং বাসা বাড়ির অলিগলিতে মেশিনের মাধ্যমে ঔষধ ছিটিয়ে মশা নিধন কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছি।

পৌরবাসীর সেবার মান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,পৌরবাসী যাতে তাদের কাঙ্খিত সেবা পায় সে জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।প্রতিটি ওয়ার্ডে রাস্তা,ড্রেনেজ ব্যবস্থা,পাড়া মহল্লার রাস্তা,অলিগলিতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে  লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরগণের মাধ্যমে পৌরবাসির সমস্যার বিষয়ে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছি।আসা করি আগমী নির্বাচনেও পৌরবাসি আমাকে মূল্যাযন করবেন। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পাঠক মতামত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই